ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: ১৯/০১/২০২৫ ১০:২৪ এএম

বঙ্গোপসাগরে অবস্থিত কক্সবাজার জেলার অন্তর্গত বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়া।

দ্বীপটি বাতিঘরের দ্বীপ নামে ও পরিচিত। ধর্মপ্রাণ দেশের মানুষের মাজারের দ্বীপ নামেও পরিচিত।

প্রতিবছর হাজার হাজার পর্যটক ভ্রমণে আসেন এই দ্বীপে।

অনুন্নত অবকাঠামো ও আধুনিক সুযোগ-সুবিধা না থাকায় পর্যটকেরা অনাগ্রহ প্রকাশ করেন।

কুতুবদিয়া চ্যানেল পারাপারে নেই কোনো উন্নত যাতায়াত ব্যবস্থা।

নদী পারাপারে ব্যবহৃত হয় গামবোট, স্পিডবোট, যা বর্ষকালে খুবই ঝুঁকিপূর্ণ।

যুগ যুগ ধরে বসবাস করা দ্বীপে মানুষের দুর্ভোগের শেষ নেই।

উপকূলীয় অঞ্চল হওয়ায় দিন দিন সমুদ্রে বিলীন হতে চলেছে দ্বীপের আয়তন। গৃহহীন ও ফসলি জমি হারিয়ে নিঃস্ব হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।

ফলে কৃষিজমির আয়তন কমে যাচ্ছে। অনুন্নত বেড়িবাঁধ, দুর্বল অবকাঠামো, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, বিশেষ করে ঘূর্ণিঝড় প্রতিবছর দ্বীপে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত করে।

টেকসই বেড়িবাঁধ, উন্নত যোগাযোগব্যবস্থা ও স্থানীয় অবকাঠামো সংস্কার করলে দ্বীপে পর্যটনের আলো ফুটবে। পরিবর্তন হবে দ্বীপের চিত্র।

চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার মধ্যবর্তী স্থানে কুতুবদিয়া দ্বীপের অবস্থান।

কম সময়ে ও স্বল্প খরচে যাতায়াতের ব্যবস্থা থাকায় পর্যটকদের জন্য সুবিধা।

কক্সবাজার জেলার অন্যান্য দ্বীপের মতো প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে পরিপূর্ণ দ্বীপ কুতুবদিয়া।

দ্বীপের পশ্চিমে দৃষ্টিমনোরম বালুময় সমুদ্রসৈকত ও পূর্বে রয়েছে দৃষ্টিনন্দন কাদাময় সমুদ্রসৈকত।

এ ছাড়া রয়েছে বাংলাদেশের প্রথম ও একমাত্র বাতিঘর, বায়ুবিদ্যুৎ, শুঁটকি উৎপাদন, লবণ উৎপাদন, সামুদ্রিক মাছ, খেজুরের রস, শীতকালীন ও গ্রীষ্মকালীন ফলমূলের সমাহার, যা পর্যটকদের আকৃষ্ট করে।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসন উদ্যোগ নিলে হয়ে উঠবে পর্যটনের অপার সম্ভাবনাময় স্পট দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়া।

সম্প্রতি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সেন্ট মার্টিন দ্বীপে পরিবেশ রক্ষায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।

মিয়ানমার সীমান্তে নিরাপত্তাব্যবস্থা সুবিধাজনক না হওয়ায় দ্বীপটি ঝুঁকিপূর্ণ।

সেন্ট মার্টিনের বিকল্প হিসেবে কুতুবদিয়া দ্বীপকে পর্যটন অঞ্চল হিসেবে বিবেচিত করা যেতে পারে।

এতে সেন্ট মার্টিনে চাপ কমবে এবং পরিবেশ রক্ষা হবে।

স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ করলে যা মেরিন ড্রাইভ রূপ নেবে, আবাসিক হোটেল, যোগাযোগব্যবস্থা, পর্যটন পুলিশি ব্যবস্থা, খাবারের দাম নির্ধারণ, অবকাঠামো উন্নয়ন, নিরাপত্তা জোরদার ও পাবলিক সার্ভিস উন্নত করলে দ্বীপ হয়ে উঠবে বাংলাদেশের অন্যতম পর্যটন অঞ্চল।

শীতে পরিযায়ী পাখির আগমন ও খেজুরের রস পর্যটকদের আকৃষ্ট করবে।

এ ছাড়া গ্রীষ্মকালে লবণ উৎপাদন পদ্ধতি পর্যটকেরা সরাসরি উপভোগ করবেন।

পর্যটনের ফলে অবহেলিত দ্বীপের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন হবে। কর্মসংস্থান হবে হাজার হাজার মানুষের।

অবকাঠামো উন্নয়নের ফলে সুবিধা পাবেন দ্বীপের মানুষ। ফলে পরিবর্তন হবে আর্থসামাজিক অবস্থার।

টেকসই বেড়িবাঁধে রক্ষা পাবে ঘূর্ণিঝড় ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে। স্থানীয় মানুষ আর গৃহহীন হবে না।

নতুন পর্যটন অঞ্চল তৈরি হলে দেশের পর্যটনশিল্পকে আরও সমৃদ্ধ করবে।

পাঠকের মতামত